১১ দিনব্যপি যাত্রা উৎসবের সহযোগিতায় গুরুকুল

যাত্রা উৎসব
যাত্রা উৎসব

‘ফিরে চল মাটির টানে’ স্লোগানকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ায় ৭ জুলাই থেকে ১১ দিনব্যাপী যাত্রা উৎসবের আয়োজন করেছিল কুষ্টিয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমী। একাডেমি মিলনায়তনে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ।

স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, গ্রাম বাংলার মানুষের বিনোদনের মুলই ছিল একসময় যাত্রাপালা। গ্রামের মাটি ও মানুষের বাস্তব জীবনের গল্পের ছায়ায় তৈরি হতো সেসব যাত্রার গল্প। এছাড়া ইতিহাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা যাত্রার মাধ্যমে তুলে আনা হতো। যাত্রা শুধু বিনোদনই নয় যাত্রা ছিল আমাদের আমাদের লোকসংস্কৃতির সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী শিল্পমাধ্যম এবং লোক শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ বাহন। আজ সেই যাত্রাপালা আর নেই।

যে যায়গায় যায়গা নিয়েছে বিভিন্ন ধরনের মিশ্র সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতি যার সাথে আমাদের শেকড়ের সম্পর্ক নেই বললেই চলে। তাই জেলা শিল্পকলা যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে আমি সাধুবাদ জানাই। আশা করি এ ধরেনের উদ্যোগের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পধারাটি বাঁচবে। আমাদের আগত প্রজন্ম অশ্লীলতার হাত থেকে রক্ষা পাবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী রবিউল ইসলাম, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, পুলিশ সুপার এস এম মেহেদী হাসান, পশ্চিমবাংলার বিখ্যাত অভিনেতা ও সংগঠক তাপস ব্যানার্জী, কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম,

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহীন সরকার, জেলা কালচারাল অফিসার সুজন রহমান, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি শেখ গিয়াস উদ্দিন আহমেদ মিন্টু, চৌধুরী মুর্শেদ আলম মধু, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি জেবুন নেসা সবুজ, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. খন্দকার শামস তানিম মুক্তি, জেলা পরিষদ সদস্য জান্নাতুল মাওয়া রনি।

যাত্রা উৎসব
যাত্রা উৎসব

সমাপনি অনুষ্ঠান আয়োজিত হয় ১৭ জুলাই রাতে। সহায়তা করে গুরুকুল। সমাপনি অনুষ্ঠানে অতিথিরা ছিলেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক জহির রায়হান, গুরুকুল প্রমুখ সুফি ফারুক ইবনে আবুবকর, আওয়ামীলীগ নেতা আতাউর রহমান আতা ও শিল্পকলার সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে গুরুকুল প্রমুখ বাংলাদেশের যাত্রাপালার এ্যতিহ্য, বিলুপ্তি ও উত্তরণ বিষয়ে কথা বলেন। আগত শিতে কুমারখালীতে একই ধরনের আয়োজন করতে শিল্পকলা একাডেমীকে আমন্ত্রণ জানান। জেলা প্রশাসক জহির রায়হান বলেন ” আমাদের এই ক্ষয়িঞ্চু আদর্শের সমাজকে কলুষি মুক্ত করতে যাত্রাপালার কোন বিকল্প নেই। উৎসবের ১০ রাতে ১০টি যাত্রাপালা মঞ্চস্থ হয়।

শুক্রবার প্রথম রজনীতে মঞ্চস্থ হয় ‘নাচ ঘরের কান্না যাত্রা’। আয়োজনকারী জেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারন সম্পাদক আমিরুল ইসলাম জানান “অশ্লীল নৃত্য আর অসাধু ব্যবসায়িক চিন্তার কারনে সভ্য সমাজের রূচিশীল মানুষরা যাত্র বিমুখ ছিল। সেই অপসংসস্কৃতির করালগ্রাসে আমাদের বিলুপ্তপ্রায় যাত্রাশিল্পকে ধ্বংসের পথ থেকে ফেরাতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগ জেলা পর্যায়ে সারা বাংলাদেশে এটাই প্রথম।

আরো পড়ুনঃ যাত্রা