মাতৃভাষা দিবসে ২০১৯ কুষ্টিয়ায় সর্ববৃহৎ র‌্যালি আয়োজন করল গুরুকুল

২১শে ফেব্রুয়ারি ২০১৯, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়া জুড়ে নানা আয়োজনের মধ্যে সবচেয়ে বড় র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয় দেশের স্বনামধন্য শিক্ষা পরিবার গুরুকুল-এর উদ্যোগে।

এবারের শ্লোগান ছিল—
“দাপ্তরিক সব কাজ আমরা বাংলায় করি, আপনি?”

মাতৃভাষা দিবসে কুষ্টিয়ায় সর্ববৃহৎ র‍্যালী সুফি ফারুকের প্রতিষ্ঠান গুরুকুলের
শহীদ মিনারে গুরুকুলের শিক্ষার্থীবৃন্দ

 

র‌্যালি ও শ্রদ্ধাঞ্জলি

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক এবং আর.এস ট্রেড প্রধান উম্মে হাবিবার নেতৃত্বে সকাল থেকেই শত শত শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা র‌্যালিতে অংশ নেন।

  • ৯ শতাধিক অংশগ্রহণকারী নিয়ে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় এ র‌্যালি কুষ্টিয়া গুরুকুল লালন সাঁই ক্যাম্পাস (কালিশংকরপুর) থেকে শুরু হয়।

  • শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শেষে র‌্যালিটি এসে শেষ হয় কুষ্টিয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।

  • সেখানে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করে ভাষাশহীদদের স্মরণ করা হয়।

 

মাতৃভাষা দিবসে কুষ্টিয়ায় সর্ববৃহৎ র‍্যালী সুফি ফারুকের প্রতিষ্ঠান গুরুকুলের - Gurukul Rally on International Mother Language Day-আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে গুরুকুল এর র‍্যালি
মাতৃভাষা দিবসে কুষ্টিয়ায় সর্ববৃহৎ র‍্যালী

 

আলোচনা সভা

শ্রদ্ধাঞ্জলি শেষে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন—

  • গুরুকুলের সহকারী পরিচালক জনাব রাকিবুজ্জামান তানিম

  • অধ্যক্ষ জনাব এম. এ. মাসুম

  • উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক উম্মে হাবিবা

  • গুরুকুলের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ

 

মূল বক্তব্য

আলোচনায় সহকারী পরিচালক রাকিবুজ্জামান তানিম বলেন:

“১৯৫২ সালে সালাম, বরকত, জব্বার, রফিক, শফিউল্লাহসহ অসংখ্য বীর সন্তানের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা বাংলা ভাষার মর্যাদা ফিরে পেয়েছি। তাদের রক্তের ঋণেই আজ আমরা মাতৃভাষায় সাহিত্য, গান, কবিতা ও নাটক রচনা করছি। একুশ কেবল আমাদের নয়, এটি এখন বিশ্বব্যাপী ভাষার অধিকারের প্রতীক।”

তিনি আরও যোগ করেন, ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এরপর থেকে বিশ্বের সব প্রান্তে দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে।

দেশব্যাপী কর্মসূচি

কুষ্টিয়ার পাশাপাশি ঢাকা, রাজবাড়ি, কুমারখালী ও খোকসা গুরুকুল ক্যাম্পাসেও একইসাথে মাতৃভাষা দিবসের নানা কর্মসূচি পালিত হয়। শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ ছাড়াও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ও আলোচনা সভার মাধ্যমে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে।

সুফি ফারুক ইবনে আবুবকর প্রতিষ্ঠিত গুরুকুল এ বছরও প্রমাণ করল যে, শিক্ষা শুধু পাঠ্যবইয়ের ভেতর সীমাবদ্ধ নয়, বরং ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। কুষ্টিয়ায় আয়োজিত এ র‌্যালি ও কর্মসূচি নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের বার্তা পৌঁছে দিয়েছে এবং বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার অঙ্গীকারকে আরও দৃঢ় করেছে।